মিজানুর রহমান টনি: হৃদ্রোগের এই বাড়বাড়ন্ত পরিস্থিতিতেও এই রোগ নিয়ে এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে। কিছু ভ্রান্ত ধারণাও রয়েছে। যেগুলির কারণে সমস্যা আরও বাড়ছে। সেগুলি কী কী?
বিশ্বব্যাপী হৃদ্রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর প্রায় ১৭.৯ লক্ষ মানুষ মারা যান হার্ট অ্যাটাকে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, অনিয়মিত খাওয়াদাওয়া, মানসিক চাপ— এমন কিছু কারণে হৃদ্যন্ত্রজনিত সমস্যা দেখা দেয়। হৃদ্রোগের এই বাড়বাড়ন্ত পরিস্থিতিতেও এই রোগ নিয়ে এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে। কিছু ভ্রান্ত ধারণাও রয়েছে। যেগুলির কারণে সমস্যা আরও বাড়ছে। জীবনধারা বদলানোর আগে ধারণাগুলি বদলে নেওয়া জরুরি।
কমবয়সিদের হৃদ্রোগ হয় না
অনেকেই এমন ধারণা পোষণ করেন। বয়স কম, ফলে আর যা-ই হোক, অন্তত হৃদ্রোগের ঝুঁকি নেই। এমন ভাবনার কোনও ভিত্তি নেই বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বরং কম বয়সিদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে হৃদ্রোগ। বাইরের খাবার খাওয়ার প্রবণতা এর অন্যতম একটি কারণ। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজাভুজি খাওয়ার ফলে বাড়ছে স্থূলতার মতো সমস্যা। সেই সঙ্গে ডায়াবিটিসও। এই ক্রনিক কিছু রোগের হাত ধরেই হৃদ্রোগ হানা দিচ্ছে শরীরে। তাই সব বয়সেই সুস্থ থাকা প্রয়োজন। শরীরচর্চা করাও জরুরি।
হৃদ্রোগ বংশগত
পরিবারে কেউ হৃদ্রোগে আক্রান্ত মানে, আপনারও হৃদ্রোগ হওয়া অবশ্যম্ভাবী— এমন ভাবনার আদৌ কোনও কারণ নেই। হৃদ্রোগ বংশগত নয়। তাই এমনটা ভেবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার কোনও কারণ নেই। বরং এই রোগ কী ভাবে প্রতিরোধ করা যায়, সেই চেষ্টা করুন। শারীরিক ভাবে সব সময়ে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করুন, ধূমপান বন্ধ করুন, ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরলের মতো সমস্যাগুলি থেকেও নিজেকে দূরে রাখুন।
হার্ট অ্যাটাক নিঃশব্দ ঘাতক নয়
হার্টের সমস্যায় ভুগছেন কি না, তা সব সময়ে আগে থেকে বোঝা কিংবা জানা সম্ভব নয়। হয়তো যখন জানতে পারলেন, আপনার হাত থেকে চেষ্টা করার সময়টা পর্যন্ত নেই। তাই প্রাক উপসর্গের আশায় বসে থাকবেন না। সব সময়ে তা দৃশ্যমান না-ও হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে নিজের যত্ন নিন। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার দিকে জোর দিন। চিকিৎসকের সঙ্গে সংযোগে থাকুন।
হার্ট অ্যাটাক শুধু পুরুষদের হয়
মহিলাদের মধ্যেও বাড়ছে হৃদ্রোগের আশঙ্কা। পরিসংখ্যান বলছে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মহিলাদের মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী। বয়স ৬০ পেরোতেই অনেকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। বিশেষ করে ঋতুবন্ধের পর এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে থাকে। তাই সাবধানতা এবং সতর্ক থাকা জরুরি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.